বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে মাত্রা নিরাপদ বলে মনে করে নয়াদিল্লির কিছু অংশে বায়ুদূষণ তার প্রায় নয়গুণ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত সিস্টেম অব এয়ার কোয়ালিটি ওয়েদার ফোরকাস্টিং অ্যান্ড রিসার্চ- এর তথ্য মতে, বাতাসে সর্বাধিক বিপজ্জনক কণার স্তর ‘পিএম ২.৫’, প্রতি ঘনমিটারে প্রায় ২৫০ মাইক্রোগ্রামে পৌঁছেছে, যা মানুষের শ্বাসযন্ত্রের জন্য অতি বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়।
নিয়মিতভাবে প্রতি বছরের এই সময়ে দুই কোটি জনসংখ্যার দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর হয়ে ওঠে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বায়ু দূষণ অব্যাহত থাকলে দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত রোগীরা আরও ঝুঁকিতে পড়বেন কারণ নয়াদিল্লি ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃত্যু ১২ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৪: জেএইচইউ
অরবিন্দ কুমার নামে নয়াদিল্লির এক সার্জন বলেন, ‘বায়ুর গুণগতমান খারাপ হতে শুরু করার পর আমরা আরও বেশি কোভিড-১৯ সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করছি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেই আমি আশঙ্কা করছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের পরে করোনাভাইরাসে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ভারত যেখানে এ পর্যন্ত ৮৪ লাখের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দেশটিতে প্রতিদিন নতুন সংক্রমণের হার হ্রাস পেলেও, সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে বেড়েছে সংক্রমণের মাত্রা।
সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কায় চলতি মাসে দীপাবলি উৎসবের সময় আতশবাজি ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
তিনি বলন, ‘দূষণের কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।’
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিয়াও উ বলেছেন, বিভিন্ন গবেষণা থেকে এটি প্রতীয়মান হয় যে দূষণের কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতা বাড়তে পারে।
‘দীর্ঘমেয়াদী বায়ু দূষণ এবং কোভিড-১৯ এর সম্পর্ক বিরূপ স্বাস্থ্য প্রভাবকে নির্দেশ করে যা মানুষকে সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলছে,’ বলেন তিনি।
বায়ু দূষণ এবং ক্রমবর্ধমান কোভিড-১৯ সংক্রমণের মধ্যে যোগসূত্রটি এই মুহূর্তে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক পর্যায়ে থাকলেও অনেক গবেষক বলছেন, মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্বের মতো বিষয়গুলোর পাশাপাশি বায়ু দূষণকেও করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের একটি মূল উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।